Monday, August 18, 2014

এক গাছে ৪০ ধরণের ফল!


 

ঢাকা, আগস্ট ১৬: একেক গাছে একেক প্রকার ফল ধরে এটা সবার জানা। আর এক গাছে দুই ধরণের ফল! এটা পাগলের প্রলাপ ছাড়া কিছুই না। কিন্তু যদি বলি এক গাছে ৪০ ধরণের ফল! এটা কি বিশ্বাস করার মতো। হ্যাঁ পাঠক বিচলিত হওয়ার কিছু নাই।

সম্প্রতি এমন এক সংবাদ দিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার। মানুষের তৈরি একটি গাছে ৪০ রকমের ফল ধরে! প্রত্যেক ফলের ডালে নিজ নিজ মৌসুমে ফুল আসছে এবং ফল ধরছে। আর সব ফলগুলোই খাওয়ার যোগ্য।

সিরাকাস বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব ভিজ্যুয়াল অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টস এর একজন স্কাল্পচার প্রফেসর যান ভ্যান অ্যাকেন। একটি গাছের জন্ম দিতে নয় বছর পার করেছেন। তার বিশাল পরিকল্পনায় সময় খুবই কম ছিল। কারণ গোটা ফলের বাগানকে তিনি একটি গাছে পরিণত করেছেন।

এই গাছটি তৈরি করতে তিনি গ্রাফটিং পদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন। এই পদ্ধতিতে শত বছর ধরে মানুষ এক গাছের সঙ্গে অন্য গাছের মিলন ঘটিয়েছে। পদ্ধতিতে দুটো গাছের ডালকে এমনভাবে জুড়ে দেওয়া হয় যাতে দুটো ভিন্ন গাছের শিরা-উপশিরা অন্যটির মধ্যে প্রবাহিত হয়, ঠিক দুটো রক্তনালীকে মিলিয়ে দেওয়ার মতোই। এই নালী দুটোকে বলা হয় লোয়েম এবং জাইলেম। এই পদ্ধতিতে দুটো গাছ তাদের পানি, চিনি এবং খনি পদার্থ বিনিময় করে। গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে কোনো দুর্বল গাছ অন্য শক্তিশালী গাছের বিভিন্ন উপাদান গ্রহণ করে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যদিও গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে একাধিক গাছগুলোকে জুড়ে দেওয়া যায়, তবে ৪০টি গাছকে এক করা প্রায় অসম্ভব। এর জন্য বছরের পর বছর সময় দেওয়ার পরও ব্যর্থতা আসতে পারে।

প্রফেসর যা করেছেন তা হলো, একটি গাছ নিয়ে তিনি তা - বছর ধরে পরিচর্যা করেছেন। এর ডাল-পালা পরিপুষ্ট হলে -৫টি কেটে নিয়ে সেখানে অন্য ফলের -৫টি ডাল গ্রাফট করেছেন। এভাবে ২০-২৫টি ভিন্ন ভিন্ন গাছের অংশ জুড়ে দেওয়ার পর পরিচর্যা করতে হয়েছে। প্রায় বছরের পরিচর্যায় নতুন অংশগুলো অন্যের সঙ্গে খনিজ আদান-প্রদানে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। তারা প্রত্যেকেই যেনো একটি গাছের অংশ হয়ে যায়। এরপর আরো নতুন ফলের অংশ জুড়ে দিতে থাকলেন ভ্যান অ্যাকেন। এভাবে চলতেই থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না ৪০টি গাছ একে অপরের সঙ্গে জুড়ে যায়।

বিষয়প্রফেসর বলেন, জুড়ে দেওয়া নতুন নতুন ফলের ডাল তাদের নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে এবং তাদের নিজস্ব ফুল ফল ৎপন্ন হচ্ছে। এই পদ্ধতির পেছনে যে বিজ্ঞান কাজ করে তা আসলে একটি গাছের উপজাত তৈরি করে। তবে আমার কাছে এটি গাছের অংলকার।

অ্যাকেনের এই পরিশ্রমের ফসল যা রিয়েছে তা হলো, এগ্রিকালচারের দুনিয়ায় গ্রাফটিংকে ভিন্ন পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছেন। এই পদ্ধতি বিশ্বকে ক্ষুধা থেকে বাঁচাতে পারবে না, তবে ভিন্ন ধরনের চিন্তায় উদ্বুদ্ধ হতে পারেন অনেকে বলেই মনে করেনএক গাছে চল্লিশ ফলএর যাদুকর ভ্যান অ্যাকেন।

এই গাছে ভিন্ন ভিন্ন ফল আসার সময় তাদের রং ঠিক রাখার জন্য তিনি সঠিক সময়ে তাদের গ্রাফটিং করেছেন বলেও জানান।

তবে ¯্রফে গ্রাফটিংয়ের সফলতাকে চূড়ায় নিতেই কী এই কাজ করেছেন তিনি? আসলে তা মোটেও নয়। ভ্যান জানালেন, /১১ এর পর মানব জাতির বেঁচে থাকা, আশাবাদ এবং সবকিছুকে নতুনভাবে ধারণ করার প্রত্যাশা নিয়েই এই গাছের জন্ম। কিন্তু ৪০ সংখ্যাটি কেনো? এরও কারণ রয়েছে। সংখ্যাটি সসীম অসীমের মাঝামাঝি কোনো একটি সংখ্যা। আবার বাইবেলেও ৪০ সংখ্যাটিকে অগণ্য জনপ্রিয় সংখ্যা হিসেবে দেখানো হয়েছে। (সূত্র: ইন্টারনেট)


শেয়ারনিউজ২৪//১৬৫০ঘ.

No comments:

Post a Comment